Reading Time: 7 minutes
পাবলো নেরুদা ১৯৪৮ সালের দিকে নির্বাসিত জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। স্বদেশে তাঁর বিরুদ্ধে ছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। কিছু সময় তিনি ইতালীতেও ছিলেন তখন। এইটুকু সত্য কাহিনী। এরপর একটু কল্পনার আশ্রয় নেয়া যায়।
পাবলো নেরুদা তাঁর স্ত্রী মাতিলদেকে নিয়ে চলে গেলেন ইতালীর ছোট্ট একটা দ্বীপে। সেখানকার মানুষগুলো অশিক্ষিত, মাছ ধরাই একমাত্র পেশা। সেই দ্বীপে থাকতে গেলেন পাবলো নেরুদা। ভক্তদের প্রচুর চিঠি আসে। ফলে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিতে হল একজন পোস্টম্যান। মারিও খানিকটা শিক্ষিত, বাবার মতো মাছ ধরতে তার ভাল লাগে না, তার একটা সাইকেল আছে। পোস্টম্যানের চাকরিটা হয়ে গেল মারিওর।
পাবলো নেরুদার সঙ্গে এক ধরণের ঘনিষ্ট সম্পর্ক হল মারিওর। একবার নেরুদা তাকে জিজ্ঞেস করলো এই দ্বীপের সেরা জিনিষ কি? মারিওর উত্তর, বিয়াত্রিস রুশো। বিয়াত্রিসের প্রেমে পড়েছে মারিও। মারিও নেরুদার কবিতা শুনিয়ে বিয়াত্রিসকে মুগ্ধ করে ফেললো।
তারপর একদিন নির্বাসনে থাকা শেষ হল নেরুদার। ফিরে গেলেন ইতালী ছেড়ে। কিন্তু পালটে দিয়ে গেলেন মারিওর মন মানসিকতা, চিন্তা ভাবনা ও জীবন। এরপরের ঘটনা একদমই অন্যরকম। সেই ঘটনা, সেই কল্পনার একটা চিত্রকল্প আমরা দেখতে পাবো ইতালীর বিখ্যাত একটি সিনেমায়। লা পোস্টিনো বা দি পোস্টম্যান।
অসাধারণ এই সিনেমাটি ঠিক যেন নেরুদার কবিতার মতোই। নেরুদার ভক্তদের অবশ্যই দেখা উচিৎ ছবিটি। তুমুল বিখ্যাত একটি সিনেমা।
২.
লা পোস্টিনো ফিকশন। এবার এবার একটা নন ফিকশনের কথা বলি। জন কিটস মাত্র ২৫ বছর বয়সে রোগে ভুগে ১৮২১ সালে মারা গিয়েছিলেন। জীবদ্দশায় তাঁর কবিতা নিয়ে তেমন আলোচনা ছিল না। কিন্তু এখন কিটস কে বলা হয়, সেরা রোমন্টিক কবিদের একজন।
উইকি থেকে বলি,
কিটস প্রথমে এনফিল্ডের একটা স্কুলে লেখাপড়া করেন। ১৬ বছর বয়সে কিটস এনফিল্ডের স্কুল ত্যাগ করেন। তরুণ বয়স থেকেই তার কবি হওয়ার প্রতি ঝোঁক ছিলো। তা সত্ত্বেও কিটস গাই হাসপাতালে ওষুধ বিদ্যায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। সেখানে তার সাথে লেই হান্ট নামে এক প্রতিষ্ঠিত কবির সাথে যোগাযোগ হতে শুরু করে। লেই হান্ট কিটসের সাহিত্য কর্মের প্রশংসা করেন এবং তাকে সাহিত্য চর্চায় উৎসাহিত করেন। ১৮১৬ সালে সে ওষুধ বিদ্যার পেশা ত্যাগ করেন এবং পরিপূর্ণ ভাবে কবিতায় মনোনিবেশ করেন। ১৮১৮ সালে কিটসের ভাই টম মারাত্মকভাবে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন এবং কিটস তার সেবা যত্ন করেন। কিন্তু টম ডিসেম্বরে মারা যান। এর পরে কিটস তার বন্ধু চার্লস ব্রাউনের হ্যাম্পস্টেডর বাসায় চলে আসেন। এখানে এসে কিটস ফ্যানি ব্রন নামে ১৮ বছরের এক তরুণী প্রতিবেশীর প্রেমে পড়ে যান। এর পর থেকেই কিটসের সৃষ্টিশীল সময়ের সূচনা হয়।
কিটস একটি আংটি দিয়েছিলেন ফ্যানিকে, সেই আংটি কখনোই হাত থেকে খোলেননি তিনি। দীর্ঘ কালো চুল কেটে ফেলেছিলেন কিটস-এর মৃত্যুর পর। পোষাকের প্রতি ব্যাপক আকর্ষণ ছিল। চিরদিনের জন্য কালো পোশাক পড়া শুরু করেছিলেন ফ্যানি। সবচেয়ে বড় কথা ফ্যানিকে নিয়ে লেখা কবিতাগুলোর জন্যই কিটস আজও সেরা রোমান্টিক কবি। আর আছে ফ্যানিকে লেখা কিটস-এর অসংখ্য চিঠি।
ব্রাইট স্টার মুক্তি পেয়েছিল ২০০৯ সালে। ছবিটি মুক্তির সময় পেঙ্গুইন থেকে বিশেষ একটি গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই গ্রন্থটিতে আছে ফ্যানিকে লেখা কিটস-এর চিঠি ও কবিতা। ১৪৪ পৃষ্ঠার বইটির নাম
Bright Star: Love Letters and Poems of John Keats to Fanny Brawne
৩.
কিটস আর ফ্যানি ব্রনের কথা উঠলে একটা নাম ঠিকই মাথায় চলে আসবে। আবুল হাসান। মাত্র ২৮ বছর বয়সে তিনিও মারা যান। আবুল হাসান মানেই তো সুরাইয়া খানম। শেষ সময়ে আবুল হাসানের সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন সুরাইয়া খানম। এই সুরাইয়া খানম নিয়ে অনেকেরই ব্যাপক আগ্রহ আছে। কিন্তু জানা যায় খুবই কম। আবুল হাসানের বন্ধুরা তেমন কিছু লেখেননি। যারা লিখেছেন তারা যে সুরাইয়া খানমকে পছন্দ করতেন তা বলা যাবে না। বরং আবুল হাসানের কাছ থেকে সবাইকে দূরে রাখার জন্য সুরাইয়া খানমের প্রতি এক ধরণের বিরাগ দেখিয়েছেন। এ ধরণের কথা নির্মলেন্দু গুণও লিখেছিলেন।
সুরাইয়া খানম নিয়ে দুজনের লেখাই বেশি। একজন হলেন নির্মলেন্দু গুণ, আরেক জন আহমদ ছফা। আহমদ ছফা জীবনে তিনটি আত্মজৈবনিক উপন্যাস লিখেছিলেন।
নূরুল আনোয়ারের ছফামৃত থেকে উদ্ধৃতি দেই:
ছফা কাকার তিনটি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস রয়েছে। উপন্যাসগুলো হল, অলাতচক্র, পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ ও অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী। এই উপন্যাসগুলোতে তিনি কল্পনার চেয়ে সত্যকে বেশি প্রাধান্য দেয়া দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করতেন এই উপন্যাসগুলোতে একটুও মিথ্যার ছোঁয়া নেই। অলাতচক্র উপন্যাসটিতে তরু সম্পর্কে একটি নির্ভেজাল কাহিনী বিধৃত হয়েছে। এই উপন্যাসটি রচিত হয় ঊনিশ শ’ চুরাশি সালে এবং ওই বছর নিপুণ পত্রিকায় তা ছাপা হয়েছিল। ওই সময় উপন্যাসের চরিত্রগুলো ছিল তরু, ফ্লোরা, বুলা, মা, বড়দা, সত্যেনদা, ওয়াহিদুল, সনজীদা, আহমদ (ছফা) ইত্যাদি নামে। পরে শুনতে পাই এই নামগুলো উল্লেখ করার কারণে অনেকে কাকাকে নালিশ করেছিলেন। ফলে ঊনিশ শ’ তিরানব্বই সালে উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে ছাপার প্রাক্কালে পরিমার্জন করার সময় নামগুলো তিনি পরিবর্তন করে দেন। এতে তরুর নাম পাল্টিয়ে লেখা হয়েছিল তায়েবা এবং আহমদের নাম দানিয়েল।
এই তরুই ছিলেন সম্ভবত আহমদ ছফার প্রথম প্রেম। তাদের সম্পর্কের ছোট্ট একটা ঘটনা পাওয়া যায় দিনু বিল্লার বইটিতে। সেই যে, পরীক্ষা দেয়ার আগে তরু এসেছিলেন আহমদ ছফার কাছে যেন তিনিই কলমে কালিটা ভরে দেন। বলে রাখা ভাল, অলাতচক্র পড়লে সেই সময়ের কিছু মানুষের চেহারা চোখের সামনে ভেসে উঠবে। যারা পড়েননি তারা জানেন না কি পড়েননি।
অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী মূলত দুই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের গল্প। এর একজন দুরদানা, আরেকজন শামারোখ। ছফামৃত বইটিতে নূরুল আনোয়ার লিখেছেন,
ছিয়ানব্বই সালে তাঁর প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরীতে শামীম শিকদার সম্পর্কে একটি বড় অংশ স্থান পেয়েছে। এ বইতে শামীম শিকদারের নামটি পাল্টে লিখেছেন ‘দুরদানা’। এই বইয়ে বর্ণিত কাহিনী সম্পর্কে ছফা কাকা সকলকে বলতেন, আমি একটুও মিথ্যে লিখিনি। একই কথা আমি শামীম শিকদারকেও বলতে শুনেছি।
কন্যা শামারোখ ছিলেন আলোচিত এই সুরাইয়া খানম। নূরুল আনোয়ার এ নিয়ে লিখেছেন,
সুরাইয়া খানমের সঙ্গে পরিচিত হবার পর ছফা কাকা অন্যদের কাছ থেকে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন তাঁর বিক্ষিপ্ত লেখা থেকে তা সহজে অনুমান করা যায়। অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরীতে ছফা কাকা সুরাইয়া সম্পর্কে অনেক কাহিনী বয়ান করেছেন। এ উপন্যাসটি যেহেতু আত্মজীবনীমূলক, তাই কাহিনী নির্মাণে কল্পনার চেয়ে বাস্তবতাকে তিনি বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়। ছফা কাকা তো নানা জায়গায় বলেছেন, এ উপন্যাসটিতে তিনি একটুও মিথ্যে লিখেননি। যা ঘটেছে, যা জেনেছেন, যা দেখেছেন তাকে তিনি তাঁর লেখনি শক্তি দিয়ে গুছিয়ে বলার চেষ্টা করেছেন। ব্যত্যয় ঘটেছে শুধু নামের ক্ষেত্রে। এখানে তিনি সুরাইয়া নামটি বিসর্জন দিয়ে ব্যবহার করেছেন ছদ্মনাম কন্যা শামারোখ।
সুরাইয়া খানমের সঙ্গে পরিচয়টা ছফা কাকার লেখায় দু’ জায়গায় এসেছে। প্রথম লিখেছিলেন তিনি ডায়েরির পাতায়, তারপর অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী উপন্যাসে। দুই জায়গায় কাহিনী বিন্যাস দু রকম হলেও ঘটনা এক। তিয়াত্তর সালের পনের সেপ্টেম্বরের ডায়েরির পাতায় তিনি লিখেছেন:
“বেশ কদিন আগে শামীমের মাধ্যমে সুরাইয়া খানমের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। মহিলার নামে অজস্র অপবাদ। এক শ’ পুরুষের সঙ্গে নাকি তাঁর খাতির। এসব কথা এখন হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। এ জাতীয় খারাপ বলে কথিত মহিলাদের প্রতি আমার তীব্র আকর্ষণ রয়েছে। হুমায়ুনের স্মৃতি পুরস্কারের চাঁদা তুলতে যেয়ে বাংলা একাডেমীতে এই অনুপম সুন্দর মহিলাকে দেখি। তাঁকে বোধহয় খোঁচা দিয়ে কথা বলেছিলাম। সে যাক, মহিলা দু’ দু’বার শামীমসহ আমার এখানে এসেছিলেন। একবেলা খেয়েছিলেন। দু’বার শামীমের হোস্টেলে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। টুকরো টুকরো কথাবার্তা হয়েছে। গতকাল মনে মনে প্রার্থনা করেছিলাম যেন উপযুক্ত কোন মহিলার সঙ্গে দেখা হয়। ঠিক তিনটের দিকে সুরাইয়া এসে উপস্থিত। গোটা দিন অভুক্ত। ভদ্রমহিলা দৈনিক বাংলার শাহাদত চৌধুরী নামে এক ভদ্রলোককে চড় লাগিয়ে দিয়ে এসেছেন। আমার মনে হল তিনি আমার সঙ্গে অত্যন্ত পক্ষপাতের সুরে কথা কইলেন। প্রকারান্তরে বললেন, কাউকে বিয়ে করতে চান। বিগত স্বামীর দোষ বললেন। তাঁকে শামীমের হোস্টেল অবধি দিয়ে এলাম। যেতে যেতে War and Peace-এর সেই যে আঁদ্রের মৃত্যুর দৃশ্যটার কথা বললেন, জীবনে আমি ভুলব না। ভদ্রমহিলা চরিত্রহীন হোন, মাথা খারাপ হোন তাঁর প্রতি সুগভীর আকর্ষণ বোধ করছি। (ছফা, খ. ১, পৃ. ২৯৮)
আহমদ ছফার সুরাইয়া নিয়ে মানুষের যতটা আগ্রহ তারচেয়ে বেশি আগ্রহ আবুল হাসানের সুরাইয়া খানম নিয়ে। তারপরেও সুরাইয়া খানমকে জানতে সবচেয়ে ভাল বই আহমদ ছফার বইটিই। আহমদ ছফা লিখেছেন, সুরাইয়া খানমের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পরই পত্র পত্রিকায় আবুল হাসানের (উপন্যাসে নাম শাহরিয়ার) কবিতা পড়েই তিনি মুগ্ধ হয়েছেন বেশি। ঠিক এ কারণেই মনে পড়ে যায় ফ্যানি ব্রনের কথা।
৪.
নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে লেখা আবুল হাসানের শেষ চিঠিটার কথা লিখেছেন। সেখানে সুরাইয়া খানম নিয়ে একটা লাইন আছে। আবুল হাসান লিখেছেন,
‘এই একাকীত্বের দরকার ছিলো আমারও। আমি অনেকদিন এরকম সুন্দরভাবে একা হতে পারিনি। বার্লিন থেকে ফেরার পর আমি এই একাকীত্বই বিভিন্নজনের সান্নিধ্যে খুঁজতে চেষ্টা করেছি। যার জন্য আমি এক রমণীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম, এখন সেই শ্রীমতিও আমাকে আর একাকীত্ব দিতে পারেন না।’
কবিদের একাকীত্বের ব্যাখ্যারা কবিরাই ভাল দিতে পারবেন।
আবুল হাসানের মৃত্যুর সেই সময়টা আর সুরাইয়ার প্রতিক্রিয়ার একটা সুন্দর দৃশ্য একেছেন অর্ধৈক নারী অর্ধৈক ঈশ্বরী বইটিতে। তারপরেও ব্রাইট স্টার সিনেমায় ফ্যানি ব্রন কিটস এর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে যেভাবে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন সেটিই কেন জানি বেশি আর্দ্র করে হৃদয়কে।
৫.
ফ্যানি ব্রন কিটস এর মৃত্যুর পর ১২ বছর আর বিয়ে করেননি। আজীবন কিটস-এর দেয়া আঙটি হাতে রেখেছিলেন। কিন্তু সুরাইয়া খানম?
আহমদ ছফা লিখেছেন,
‘জীবন শিল্প নয়, কবিতা নয়। জীবনে যা ঘটে শিল্প বা কবিতায় তা ঘটে না। জীবনের সঙ্গে অন্য কোনো কিছুর তুলনা চলে না এবং জীবন ভয়ানক নিষ্ঠুর। সমস্ত প্রতিশ্রুতি, সমস্ত প্রতিজ্ঞা, সমস্ত স্বপ্ন দু:স্বপ্নের ওপারে জীবনের লীলাখেলা।……..শাহরিয়ারের (আবুল হাসান) মৃত্যুর পনের দিনের মধ্যেই শামারোখ (সুরাইয়া) জমিরউদ্দিনকে (সালাহউদ্দিন) বিয়ে করে ফেলেছিল।’
৬.
সুরাইয়া খানম সুন্দরী ছিলেন। সুরাইয়া অভিনয়ও করতেন। আতিকুল হক চৌধুরী ১৯৮০ বা ৮১ সালের দিকে শেষের কবিতা নিয়ে একটি টেলিভিশন নাটক করেছিলেন। সেই নাটকের লাবন্য ছিলেন সুরাইয়া খানম। সম্ভবত অমিত হয়েছিলেন সৈয়দ আহসান আলী সিডনী। সুরাইয়া খানমের একটি ছবিও পাওয়া যায়। নেট ঘেটে সুরাইয়া খানমকে জানতেন এমন একজনের একটি লেখাও পাওয়া গেল। আগ্রহীরা এ থেকে অনেক কিছু জানবেন। সুরাইয়া খানম মারা যান ২০০৬ সালে।